![]() |
ছবি- প্রতিকী |
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝোলানোর হুঁশিয়ারিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের খুব লেগেছে। তারা ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে এক প্রতিবাদ লিপিতে জানিয়েছে,"প্রতিবেশী দেশের
দায়িত্বশীল ব্যক্তির এই ধরনের বক্তব্য দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের পারষ্পরিক বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধাবোধকে দুর্বল করে।
কিন্তু বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যখন বলেন,বাংলাদেশে ২৬ লক্ষ ভারতীয় যুবক চাকরি করে।শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বেকার যুবকদের চাকরি না দিয়ে ভারতীয় যুবকদের চাকরি দিয়েছিল তখন এমন একটি মিথ্যা কথা বলার জন্য বুঝি দুই দেশের সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়ে না?
ভারত প্রতিবাদ করেনি বলে বাংলাদেশ যদি মনে করে থাকে ভারত বিদ্বেষ ছড়ানো তাদের একচেটিয়া অধিকার তাহলে আখেরে বাংলাদেশই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।সহনশীলতা দুর্বলতা নয়।ভারত বরাবর সহনশীলতা বজায় রেখে সবার সাথে চলতে অভ্যস্ত।
বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মন্ডলি যেভাবে সেভেন সিস্টার্স, চিকেন নেক থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৃষ্ট বন্যাকে ভারতীয় বাঁধ খুলে দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ করা বিদ্যুৎ তেলের লাইন নিয়ে টানাপোড়েন এবং দুই দেশের কানেক্টিভিটি নিয়ে যেভাবে ভারতকে অপরাধী বানিয়ে বাংলাদেশ বিদ্বেষ প্রসূত মানুসিকতার পরিচয় দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে দুইদেশের সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে এমন একটি কথাও বলেনি।
ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুপ্রবেশ নিয়ে যা বলেছেন তা ভারতের একটি জলন্ত সমস্যা।এই সমস্যা যে একদিন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে তারই আগাম সতর্কসংকেত বলেই অনেকে মনে করছেন।
ভারতের ৫টি রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে।তাই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ একটি রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।এনিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে।
২০১৬সালে ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা নিয়ে সংসদে একটি পরিসংখ্যান দিয়েছিলেন।প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ২ কোটি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভারতে অবস্থান করছে।
এই অনুপ্রবেশের ফলে প:বঙ্গের ডেমোগ্রাফি পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।দুই কোটি অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি রয়েছে প:বঙ্গে।এই অনুপ্রবেশের ফলে ঝাড়খন্ডের সাওতাল পরগনার আদিবাসী জনসংখ্যা ৪৪% থেকে ২৮% এ নেমে এসেছে।
ঝাড়খন্ডের এক নির্বাচনী জনসভায় অমিত শাহ বলেছিলেন,ঝাড়খন্ডে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের কোন জায়গা নেই।তাদের ধরে উল্টো করে ঝোলানো হবে।তারা আমাদের মেয়েদের বিয়ে করে আমাদের জমি দখল করছে।ধ্বংস করছে সম্বৃদ্ধ আদিবাসী সংস্কৃতি।এভাবে চলতে থাকলে আগামীদিনে অনুপ্রবেশকারীদের সম্প্রদায়ই সংখ্যাগরিষ্ট হয়ে পড়বে।
ভারতীয় ঐতিহ্য রক্ষার্থে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন।
Post a Comment
0Comments